কর্ণেল আর রসিকদাদু গেলেন আশ্রমে। সাহেব আর তিন্নির অপলক দৃষ্টিবিনিময় তখনও চলছে। রসিকদাদু একটা মগে করে জল নিয়ে দুজনের মুখে ছুড়ে মারলেন। তিন্নি সম্বিত ফিরে পেয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল," এ মা, কত বেলা হয়ে গেল ! যাই আবার বাবার শরীরটা খারাপ, পথ্যি দিইগে।"
তিন্নি চলে গেলে সাহেবের দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে রসিকদাদু বললেন, "কিছু খেয়েছ ?"
সাহেব মাথা নেড়ে সন্মতি জানাল। তার মুখে কাপড় বাঁধা। ব্যাপারটা বুঝে কর্ণেল সরকার সাহেবের মুখ হতে বাঁধনটা খুলে দিলেন। এরপর কর্ণেল জিজ্ঞেস করলেন," কি অভিপ্রায়ে আসা হয়েছে ? হাতিডোবায় যা ঘটেছে তা সন্মন্ধে কি জান ? আমি রিটায়ার্ড কর্ণেল, আমাকে ফাঁকি দিতে পারবে না।"
সাহেব বলল, "আমি কিছুই জানিনা। বাবা ডাক্তারবাবুকে ডাকতে বললেন তাই এসেছি। আমাকে ছেড়ে দেন, আমার সামনে পরীক্ষা। আমি আর কোনোদিন এ গাঁয়ে আসব না। "
রসিকদাদু বললেন," ঘুঘু দেখেছ বাছাধন !.... ঘুঘুর ফাঁদ কেমন হয় এবার দেখতে পাবে। শুধু তুমি নয়, তোমার মেন্টররাও বুঝতে পারবে এই হাতিডোবা কি বিষম ঠাঁই। "
সাহেব দু'চোখে অন্ধকার দেখতে লাগল। সামনে কোনো আশার আলোই দেখা যাচ্ছে না। কি কুক্ষণেই সে অলীকপুর হতে বেরিয়েছিল !
--৫--
হাতিডোবা আর অলীকপুরের মাঝখানে ক্যানেল, আর ক্যানেলের পাশেই ঘন বন। এই বনের একচ্ছত্র সম্রাট হল ডাকু ছপ্পর সিং। ছপ্পর সিংয়ের আসল নাম প্যাঁকা। অলীকপুর আর হাতিডোবায় প্যাঁকা চোরের জ্বালাতনে ঘটিবাটি রাখাই দায় হয়েছিল। সরু লিকলিকে চেহারার প্যাঁকা চোর সিঁদ কেটে অনায়াসে লোকের বাড়িতে ঢুকে পড়ত। তারপর শুরু হত আসল খেলা।
প্যাঁকার সাথে থাকত দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরী ক্লোরোফর্ম। সিঁদ কেটে প্রথমে সেই গর্তে একটা চোখ-মুখ আঁকা মাটির হাঁড়ি লাঠির সাহায্যে ভরে দিত। বাড়ির কেউ জেগে থাকলে মানুষের মাথা ভেবে প্রথম আক্রমণ হবে ওই হাঁড়ির উপর। আর সতর্ক হয়ে যাবে চোরবাবাজীবন, - এবং থলি ঝুলি নিয়ে ভাগলবা।
আর মাটির হাঁড়ি বহাল তবিয়তে থাকলে পরের পর্যায় শুরু। প্যাঁকা তার একটা পা ধীরে ধীরে গর্তের মধ্যে ঢোকায়, তারপর পর্যায়ক্রমে হাত মাথা ও সারা শরীর ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। তারপর গৃহস্থকে অজ্ঞান করে জিনিসপত্র গয়নাগাঠি নিয়ে প্যাঁকা হাওয়া।
এইভাবেই বেশ চলছিল। দারোগাবাবুরা প্যাঁকার জ্বলনে অস্থির। কোনোমতেই তাকে ধরা যায় না। অবশেষে থানায় এলেন নতুন দারোগ, - - জগদীশ জোয়ারদার। অফিসার হিসেবে তিনি খুব কড়া। এসেই ঘোষণা করলেন যে প্যাঁকা চোরকে তার চাই। থানায় হইচই পড়ে গেল। হাবিলদার, সিপাই, আমজনতা সবাই শশব্যস্ত হয়ে উঠল। চারিদিকে একই কথা, "আর প্যাঁকার রেহাই নেই।"
এইভাবে সবাই প্যাঁকার পেছনে পড়ে গেলে প্যাঁকারও জেদ চেপে গেল। সে চিঠি লিখল জগদীশ দারোগাকে। অবশ্যই চিঠি প্যাঁকা নিজে লেখেনি। এই চিঠি লেখার জন্যে সে গিয়েছিল তার মেজোমেসো অতুল বাগ্দীর কাছে। অতুল ক্লাস থ্রি পাশ। বেরাদরিতে অতুলই একমাত্র শিক্ষিত এবং সর্ববিষয়ে পারঙ্গদ। তাই অতুলের কাছে প্যাঁকা গিয়েছিল পরামর্শের জন্য।
অতুল বলল, "আমি বলি কি বাপ, একখান হুমকি দিয়ে চিঠি দে। দারোগাবাবু ভয় পেয়ে তোর পেছন ছেড়ে দেবে।"
প্যাঁকা বলল, " তুমি যা বলবে তাই হবে মেসো। কিন্তু চিঠি লিখতে তো আমি জানি না। ক অক্ষর গোমাংস আমার কাছে। যা লিখতে হয় তুমিই লেখ।"
অতুল লেখতে বসল। খাগের কলম আলতায় ডুবিয়ে মোটা মোটা অক্ষরে লেখা হল চিঠিখানা। কাটাকুটি আর ভুলভ্রান্তি বাদ দিলে চিঠিটা মোটামুটি এই রকম :
পরম পূজনীয় দারোগাবাবু,
আপনি কাজটা ঠিক করলেন না। আপনার কাজের পিতিশোধ আমি
নিয়েই ছাড়ব মশাই। আসছে ভাদর মাসের দোসরা আপনার বাড়িতে চুরি করবার
ইচ্ছা হইছে। পারলে আমাকে ধরে আপনার দেখান।
ইতি
আপনার স্নেহের প্যাঁকা
চিঠি পড়া ইস্তক জগদীশ দারোগার মনে একটুও শান্তি নেই। তিনি পায়চারি করছেন আর কাপের পর কাপ চা খাচ্ছেন। আর জোরে জোরে হুঙ্কার ছেড়ে বলছেন, " স্নেহের প্যাঁকা ! স্নেহ বের করছি তোর। আমাকে হুমকি চিঠি ! জগদীশ দারোগাকে হুমকি চিঠি ! হাবিলদার, গাড়ি বের করো;.... রেডে বরুবো।"
এরপর হ্যাট্রিক করে ফেলল প্যাঁকা। কোনোবারই তাকে ধরা যায় না। সবাই এই অপেক্ষায় আছে যে জগদীশ দারোগার ঘরে কবে চুরি হয়। প্যাঁকা চোর হতে পারে তবে তার কথার নড়চড় হয় না। সে যখন বলেছে দারোগার বাড়িতে চুরি করবে তখন করবেই।
কৃষ্ণাতিথির রাত, মরা চাঁদের আলোয় সবকিছু অস্পষ্ট দেখাচ্ছে। একদল কুকুর রাস্তার মাঝখানে কুণ্ডলিপাকিয়ে শুয়ে আছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মরা চাঁদের আলোয় অস্পষ্ট গাছের ছায়াকে নড়তে দেখে মুখ তুলে চিৎকার করছে, পরক্ষণেই আবার মুখ নামিয়ে নিদ্রার উদ্যোগ করছে। কুকুরগুলোর আওয়াজ রাত্রির নিস্তবদ্ধতাকে ভেঙ্গে খান খান করে দিচ্ছে। এমত সময় কয়েকটা মাংসের টুকরো আর রুটি কুকুরগুলোর মুখের সামনে এসে পড়ল। আকস্মিক খাবার পাবার আনন্দে কুকুরগুলো চিৎকার ভুলে খাবারে মনোনিবেশ করল। আর সেই সুযোগে একটা অস্পষ্ট কালো ছায়া রাস্তা পার হয়ে পাশের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়ল।
আজ রাত্রে আলুর পরটার সাথে খাঁসির কষা কষা মাংস হয়েছিল। ডিউটি হতে ফেরার পথে জগদীশ দারোগা 'স্নেহলতা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার' হতে কালাকাঁদ আর গোলাপজাম এনেছিলেন, আলুপরটার সঙ্গে বেশ জমে গেল ! কিন্তু হতচ্ছাড়া পেটটা 'রণং দেহি' বলে উঠল । প্রথমে ভারি ভারি ভাব ও কুনকুনে ব্যাথা, পরে সেটা ভয়াবহ হয়ে উঠল। গিন্নীর পরামর্শে জোয়ান খেলেন। এবার শুরু হল অন্যরকম উপসর্গ, - জাপানের বোমারু বিমান হতে বোমা বর্ষণের মতো ঘন ঘন সশব্দে অধোবায়ু নির্গত হতে থাকল।
এমতো অবস্থায় দারোগাবাবুকে আর বেডরুমে থাকতে দেওয়া যায় না। তাই গিন্নী প্রথমে অনুরোধ ও পরে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বেডরুম হতে বের করে দিলেন। দারোগাবাবু মনের দুঃখ আর পেটের অস্বস্তিত নিয়েই ঝুলবারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালেন। মৃদুমন্দ হাওয়ায় বেশ আরাম লাগছিল। ঠিক তখনই ঘটল বিপত্তি। ঝুলবারান্দার রেলিং ভেঙ্গে সোজা নিচে পড়লেন দারোগাবাবু। আর পড়বি পড় সেই ছায়ামূর্তির উপর গিয়ে পড়লেন। ছায়ামূর্তি আর জগদীশ দারোগার যুগপৎ চিৎকারে সবাই জেগে উঠল।
তিন্নি চলে গেলে সাহেবের দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে রসিকদাদু বললেন, "কিছু খেয়েছ ?"
সাহেব মাথা নেড়ে সন্মতি জানাল। তার মুখে কাপড় বাঁধা। ব্যাপারটা বুঝে কর্ণেল সরকার সাহেবের মুখ হতে বাঁধনটা খুলে দিলেন। এরপর কর্ণেল জিজ্ঞেস করলেন," কি অভিপ্রায়ে আসা হয়েছে ? হাতিডোবায় যা ঘটেছে তা সন্মন্ধে কি জান ? আমি রিটায়ার্ড কর্ণেল, আমাকে ফাঁকি দিতে পারবে না।"
সাহেব বলল, "আমি কিছুই জানিনা। বাবা ডাক্তারবাবুকে ডাকতে বললেন তাই এসেছি। আমাকে ছেড়ে দেন, আমার সামনে পরীক্ষা। আমি আর কোনোদিন এ গাঁয়ে আসব না। "
রসিকদাদু বললেন," ঘুঘু দেখেছ বাছাধন !.... ঘুঘুর ফাঁদ কেমন হয় এবার দেখতে পাবে। শুধু তুমি নয়, তোমার মেন্টররাও বুঝতে পারবে এই হাতিডোবা কি বিষম ঠাঁই। "
সাহেব দু'চোখে অন্ধকার দেখতে লাগল। সামনে কোনো আশার আলোই দেখা যাচ্ছে না। কি কুক্ষণেই সে অলীকপুর হতে বেরিয়েছিল !
--৫--
হাতিডোবা আর অলীকপুরের মাঝখানে ক্যানেল, আর ক্যানেলের পাশেই ঘন বন। এই বনের একচ্ছত্র সম্রাট হল ডাকু ছপ্পর সিং। ছপ্পর সিংয়ের আসল নাম প্যাঁকা। অলীকপুর আর হাতিডোবায় প্যাঁকা চোরের জ্বালাতনে ঘটিবাটি রাখাই দায় হয়েছিল। সরু লিকলিকে চেহারার প্যাঁকা চোর সিঁদ কেটে অনায়াসে লোকের বাড়িতে ঢুকে পড়ত। তারপর শুরু হত আসল খেলা।
প্যাঁকার সাথে থাকত দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরী ক্লোরোফর্ম। সিঁদ কেটে প্রথমে সেই গর্তে একটা চোখ-মুখ আঁকা মাটির হাঁড়ি লাঠির সাহায্যে ভরে দিত। বাড়ির কেউ জেগে থাকলে মানুষের মাথা ভেবে প্রথম আক্রমণ হবে ওই হাঁড়ির উপর। আর সতর্ক হয়ে যাবে চোরবাবাজীবন, - এবং থলি ঝুলি নিয়ে ভাগলবা।
আর মাটির হাঁড়ি বহাল তবিয়তে থাকলে পরের পর্যায় শুরু। প্যাঁকা তার একটা পা ধীরে ধীরে গর্তের মধ্যে ঢোকায়, তারপর পর্যায়ক্রমে হাত মাথা ও সারা শরীর ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। তারপর গৃহস্থকে অজ্ঞান করে জিনিসপত্র গয়নাগাঠি নিয়ে প্যাঁকা হাওয়া।
এইভাবেই বেশ চলছিল। দারোগাবাবুরা প্যাঁকার জ্বলনে অস্থির। কোনোমতেই তাকে ধরা যায় না। অবশেষে থানায় এলেন নতুন দারোগ, - - জগদীশ জোয়ারদার। অফিসার হিসেবে তিনি খুব কড়া। এসেই ঘোষণা করলেন যে প্যাঁকা চোরকে তার চাই। থানায় হইচই পড়ে গেল। হাবিলদার, সিপাই, আমজনতা সবাই শশব্যস্ত হয়ে উঠল। চারিদিকে একই কথা, "আর প্যাঁকার রেহাই নেই।"
এইভাবে সবাই প্যাঁকার পেছনে পড়ে গেলে প্যাঁকারও জেদ চেপে গেল। সে চিঠি লিখল জগদীশ দারোগাকে। অবশ্যই চিঠি প্যাঁকা নিজে লেখেনি। এই চিঠি লেখার জন্যে সে গিয়েছিল তার মেজোমেসো অতুল বাগ্দীর কাছে। অতুল ক্লাস থ্রি পাশ। বেরাদরিতে অতুলই একমাত্র শিক্ষিত এবং সর্ববিষয়ে পারঙ্গদ। তাই অতুলের কাছে প্যাঁকা গিয়েছিল পরামর্শের জন্য।
অতুল বলল, "আমি বলি কি বাপ, একখান হুমকি দিয়ে চিঠি দে। দারোগাবাবু ভয় পেয়ে তোর পেছন ছেড়ে দেবে।"
প্যাঁকা বলল, " তুমি যা বলবে তাই হবে মেসো। কিন্তু চিঠি লিখতে তো আমি জানি না। ক অক্ষর গোমাংস আমার কাছে। যা লিখতে হয় তুমিই লেখ।"
অতুল লেখতে বসল। খাগের কলম আলতায় ডুবিয়ে মোটা মোটা অক্ষরে লেখা হল চিঠিখানা। কাটাকুটি আর ভুলভ্রান্তি বাদ দিলে চিঠিটা মোটামুটি এই রকম :
পরম পূজনীয় দারোগাবাবু,
আপনি কাজটা ঠিক করলেন না। আপনার কাজের পিতিশোধ আমি
নিয়েই ছাড়ব মশাই। আসছে ভাদর মাসের দোসরা আপনার বাড়িতে চুরি করবার
ইচ্ছা হইছে। পারলে আমাকে ধরে আপনার দেখান।
ইতি
আপনার স্নেহের প্যাঁকা
চিঠি পড়া ইস্তক জগদীশ দারোগার মনে একটুও শান্তি নেই। তিনি পায়চারি করছেন আর কাপের পর কাপ চা খাচ্ছেন। আর জোরে জোরে হুঙ্কার ছেড়ে বলছেন, " স্নেহের প্যাঁকা ! স্নেহ বের করছি তোর। আমাকে হুমকি চিঠি ! জগদীশ দারোগাকে হুমকি চিঠি ! হাবিলদার, গাড়ি বের করো;.... রেডে বরুবো।"
এরপর হ্যাট্রিক করে ফেলল প্যাঁকা। কোনোবারই তাকে ধরা যায় না। সবাই এই অপেক্ষায় আছে যে জগদীশ দারোগার ঘরে কবে চুরি হয়। প্যাঁকা চোর হতে পারে তবে তার কথার নড়চড় হয় না। সে যখন বলেছে দারোগার বাড়িতে চুরি করবে তখন করবেই।
কৃষ্ণাতিথির রাত, মরা চাঁদের আলোয় সবকিছু অস্পষ্ট দেখাচ্ছে। একদল কুকুর রাস্তার মাঝখানে কুণ্ডলিপাকিয়ে শুয়ে আছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মরা চাঁদের আলোয় অস্পষ্ট গাছের ছায়াকে নড়তে দেখে মুখ তুলে চিৎকার করছে, পরক্ষণেই আবার মুখ নামিয়ে নিদ্রার উদ্যোগ করছে। কুকুরগুলোর আওয়াজ রাত্রির নিস্তবদ্ধতাকে ভেঙ্গে খান খান করে দিচ্ছে। এমত সময় কয়েকটা মাংসের টুকরো আর রুটি কুকুরগুলোর মুখের সামনে এসে পড়ল। আকস্মিক খাবার পাবার আনন্দে কুকুরগুলো চিৎকার ভুলে খাবারে মনোনিবেশ করল। আর সেই সুযোগে একটা অস্পষ্ট কালো ছায়া রাস্তা পার হয়ে পাশের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়ল।
আজ রাত্রে আলুর পরটার সাথে খাঁসির কষা কষা মাংস হয়েছিল। ডিউটি হতে ফেরার পথে জগদীশ দারোগা 'স্নেহলতা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার' হতে কালাকাঁদ আর গোলাপজাম এনেছিলেন, আলুপরটার সঙ্গে বেশ জমে গেল ! কিন্তু হতচ্ছাড়া পেটটা 'রণং দেহি' বলে উঠল । প্রথমে ভারি ভারি ভাব ও কুনকুনে ব্যাথা, পরে সেটা ভয়াবহ হয়ে উঠল। গিন্নীর পরামর্শে জোয়ান খেলেন। এবার শুরু হল অন্যরকম উপসর্গ, - জাপানের বোমারু বিমান হতে বোমা বর্ষণের মতো ঘন ঘন সশব্দে অধোবায়ু নির্গত হতে থাকল।
এমতো অবস্থায় দারোগাবাবুকে আর বেডরুমে থাকতে দেওয়া যায় না। তাই গিন্নী প্রথমে অনুরোধ ও পরে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বেডরুম হতে বের করে দিলেন। দারোগাবাবু মনের দুঃখ আর পেটের অস্বস্তিত নিয়েই ঝুলবারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালেন। মৃদুমন্দ হাওয়ায় বেশ আরাম লাগছিল। ঠিক তখনই ঘটল বিপত্তি। ঝুলবারান্দার রেলিং ভেঙ্গে সোজা নিচে পড়লেন দারোগাবাবু। আর পড়বি পড় সেই ছায়ামূর্তির উপর গিয়ে পড়লেন। ছায়ামূর্তি আর জগদীশ দারোগার যুগপৎ চিৎকারে সবাই জেগে উঠল।
No comments:
Post a Comment